লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ক্রয় সামগ্রী ও সেবা ব্যয়ের ভুয়া বিল দেখিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ‌অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং এন্ড মিদ ওয়াইফারী প্রশিক্ষণের মান আন্তর্জাতিক মানের ঘোষণা দেন। বিশ্বমানের নার্সিং কাউন্সিল করার জন্য এখানকার প্রতিটি শিক্ষার্থীকে লেখাপড়ার পাশাপাশি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব দেন। অথচ এই প্রতিষ্ঠানে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তারা নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন কোর্সের ব্যয়ের ভুয়া বিল বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লালমনিরহাট নার্সিং কলেজটি শহরের সদর হাসপাতালের পিছনে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পাঠদানের মাধ্যমে কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সেখানে নার্সিং এর তিনটি কোর্স চালু রয়েছে যা বাংলাদেশের কোনো জেলার নার্সিং কলেজে নেই। বি,এস,সি ইন নার্সিং সায়েন্স, ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড ওয়াইফারী এবং ডিপ্লোমা ইন মিড ওয়াইফাই নামে বর্তমানে তিনটি কোর্স লালমনিরহাট নার্সিং কলেজে চালু রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন কোর্সে ছাত্রছাত্রী রয়েছে প্রায় ৩২০ জন।

লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ছায়েবা বেগম ২০১৯ সালে ২৯শে জানুয়ারি যোগদানের পর থেকেই দুর্নীতি শুরু করেন যা গত অর্থ বছরে বিল ভাউচারে বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ডিপ্লোমা ইন মিড ওয়াইফারী কোর্সের বিভিন্ন বিষয়ের অতিথি শিক্ষকের ক্লাস গ্রহণের সম্মানী ভাতা বিল বানিয়ে ১লক্ষ ২০হাজার টাকা তুলে নেয়। অত্র কার্যালয়ের মিড ওয়াইফাই ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণের জন্য ডিএনসি সেট ক্রয় বাবদ ভাউচারে দ্বিগুণ বিল বানিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। বিলে ব্যয় করা টাকার সরঞ্জাম পাওয়া যায়নি বললেই চলে।

এছাড়া তিনি সার্জিক্যাল, কম্পিউটার সার্ভিসিং, মনিহারি এবং বই ক্রয়সহ বিভিন্ন ক্রয়ের নামে বিল ভাউচার বানিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন যা বিলের ভাউচারে দেখলে বুঝা যায়। ভাউচারে অসংগতি সহ এক এক বিলে ১০ গুন ২০ গুন দেখিয়ে টাকা তুলে নেন তিনি। সেখানে ফান্ডামেন্টালস অফ নার্সিং নামের একটি বই দেখানো হয়েছে চার হাজার টাকা এবং বিভিন্ন দোকানের নামে বেনামে বিল ভাউচার বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ছায়েবা বেগমের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কোন কথার উত্তর না দিয়ে অফিস সহকারী আরিফ আহমেদকে ডেকে এনে সাংবাদিককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। আরিফ আহমেদ গতবছরে নার্সিং কলেজের অফিস সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। তিনি অকপটে স্বীকার করেন কাজ করলে ভুল হবে তাই অধ্যক্ষ ও আমার ভুল হয়েছে। অবশ্য গুগলে সার্চ দিলে পণ্যের দাম দেখা যায় এটা ঠিক। গত তিন বছরের বাজেটের টাকা একবারে দিয়েছে। আপনারা যা জিজ্ঞেস করেছেন আমরা সঠিক ভাবে জবাব দিতে পারবো না। কারন এক প্যাকেট A4 সাইজের কাগজের দাম ৪শত টাকার উর্ধ্বে নয় তা লেখা হয়েছে ৫২০টাকা।